০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’প্রতিষ্ঠার অপ্রকাশিত গল্প।

  • প্রতিনিধির নামঃ
  • আপলোডের সময় ০৭:৩৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • ৫২২০ সময় ভিজিটর

জোনাকি শেখ
স্টাফ রিপোর্টার

‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান, বরিশালে ভোলা জেলার দেউলা রাহমানিয়া দ্বীনিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করে।একপর্যায় পরিবারসহ ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহিমিয়াতে প্রাথমিক শেষ করে,রাজধানীর ভাটারাতে ২০১৩ সালে নাজেরা ও হিফয,২০২১ সালে বাড্ডাতে মারকাজুল উলুম কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করেন।
এরপর শিক্ষকতা জীবন শুরু করে বর্তমানে তিনি মাত্রাহীন শিক্ষার্থীদের উস্তাদ!

হাবিবুর রহমান জানান,’জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পিছনের গল্প_

একদিন রাতে খুব বিষন্ন লাগছিল।
আমার প্রায়’ই রাতে ঘুরতে বের হওয়ার অভ্যাস আছে।সেদিন রাত ১১ টা’য় আমি ঢাকা মোহাম্মদপুর থেকে ভাটারা উদ্দেশ্য হাটা শুরু করি, সাথে ছিল বন্ধু তামিম সরকার,আমরা দুজনে গুলশানে বিরিয়ানি খেতে বসি।
খাওয়া শেষে বের হয়ে দেখি একজন অসহায় মা তার বাচ্চাদেরকে নিয়ে শীতের রাতে রাস্তার ধারে এক কোণে শুয়ে রয়েছে।দৃশ্যটা দেখে আমার কাছে খুব খারাপ লাগল,আমি তখন ভাবছিলাম এই মানুষটার কোনো লাইফ সিকিউরিটি নেই, এতো বড় একটা রাত সে তার বাচ্চাদের কে নিয়ে অসহায় হয়ে পাড়ি দেবে,না আছে কোনো খাবার এর নিশ্চয়তা,না আছে এক ফোঁটা পানির নিশ্চয়তা,না আছে মাথার উপরে ছাউনি।এই নিরপরাধ অসহায় বাচ্চাগুলোর কি দোষ ছিল? তারাও তো আমাদের মতো রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ।এই অসহায় মানুষ গুলোর জন্য কিছু করার ইচ্ছে হলো,এইভাবে যেন রাস্তায়,ফুটওভার ব্রিজে কোনো বাচ্চা-মেয়েকে রাতে এক কোনায় পড়ে থেকে না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকতে না হয়,কোনো মা’কে এভাবে অনিদ্রায় রাত পারি দিতে না হয় ক্ষুদার জ্বালা নিয়ে।

আমি এই মানুষ গুলোর জন্য প্রতিনিয়ত কিছু করার চেষ্টা করতাম।প্রতি মাসে বেতন পেয়ে বাসায় বাজার করে দিয়ে আসতাম আমার বন্ধু তামিম’কে নিয়ে।
হোটেল থেকে কিছু খাবার নিয়ে অসহায় মানুষ খুঁজতাম কে ক্ষুধার্ত আছে?

একদিন বন্ধু ও ছোট ভাইদের’কে নিয়ে পরিকল্পনা করলাম একটি মানবসেবা সংগঠন সৃষ্টি করি!
২০২৪ নোয়াখালীর বন্যার সময়ে ভাবলাম,আসলে আমি একা যে কাজ করি সেটা যদি ১০জন মিলে করি,
তাহলে তো কাজটি আরও সহজে করা যাবে।এজন্য ‘ভলান্টিয়ার গ্রুপ’ সংগঠন করেছিলাম।
পরবর্তীতে সবাই মিলে ভলান্টিয়ার গ্রুপের নাম পরিবর্তন করে ‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ (সৃষ্টির সেবায় স্রষ্টার সন্তুষ্টি ) রাখা হয়।উদ্দেশ্য চাঁদাবাজ,মাদক ও ক্ষুধা মুক্ত দেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ।

ব্যাক্তিগত জীবনে আমি অনেক বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছি কিন্তু কখনো প্রকাশ করা হয়নি।কাউকে সাহায্য করে প্রকাশ করা ঠিক না তবে এখন আমার এই গল্প বলার উদ্দেশ্য অন্যদের আগ্রহ বাড়ানো।আমরা আমাদের এই উদ্যোগ পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ।

আমি অনেক ফ্রেন্ডলি, হাসি-খুশি,তার মানে এই না যে আমার জীবনে কোনো দুঃখের গল্প নেই,দুঃখের গল্প আছে বলেই অন্যদের মুখে হাসি ফুটানোর গল্প-লেখক হতে চেয়েছি জীবনে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় পোস্ট

খুলনা-১ আসনের ধানেরশীষ প্রতিকের সম্ভাব্য প্রার্থী জিয়াউর রহমান’র বাসভবনে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়।

জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’প্রতিষ্ঠার অপ্রকাশিত গল্প।

আপলোডের সময় ০৭:৩৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

জোনাকি শেখ
স্টাফ রিপোর্টার

‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান, বরিশালে ভোলা জেলার দেউলা রাহমানিয়া দ্বীনিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করে।একপর্যায় পরিবারসহ ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহিমিয়াতে প্রাথমিক শেষ করে,রাজধানীর ভাটারাতে ২০১৩ সালে নাজেরা ও হিফয,২০২১ সালে বাড্ডাতে মারকাজুল উলুম কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করেন।
এরপর শিক্ষকতা জীবন শুরু করে বর্তমানে তিনি মাত্রাহীন শিক্ষার্থীদের উস্তাদ!

হাবিবুর রহমান জানান,’জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পিছনের গল্প_

একদিন রাতে খুব বিষন্ন লাগছিল।
আমার প্রায়’ই রাতে ঘুরতে বের হওয়ার অভ্যাস আছে।সেদিন রাত ১১ টা’য় আমি ঢাকা মোহাম্মদপুর থেকে ভাটারা উদ্দেশ্য হাটা শুরু করি, সাথে ছিল বন্ধু তামিম সরকার,আমরা দুজনে গুলশানে বিরিয়ানি খেতে বসি।
খাওয়া শেষে বের হয়ে দেখি একজন অসহায় মা তার বাচ্চাদেরকে নিয়ে শীতের রাতে রাস্তার ধারে এক কোণে শুয়ে রয়েছে।দৃশ্যটা দেখে আমার কাছে খুব খারাপ লাগল,আমি তখন ভাবছিলাম এই মানুষটার কোনো লাইফ সিকিউরিটি নেই, এতো বড় একটা রাত সে তার বাচ্চাদের কে নিয়ে অসহায় হয়ে পাড়ি দেবে,না আছে কোনো খাবার এর নিশ্চয়তা,না আছে এক ফোঁটা পানির নিশ্চয়তা,না আছে মাথার উপরে ছাউনি।এই নিরপরাধ অসহায় বাচ্চাগুলোর কি দোষ ছিল? তারাও তো আমাদের মতো রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ।এই অসহায় মানুষ গুলোর জন্য কিছু করার ইচ্ছে হলো,এইভাবে যেন রাস্তায়,ফুটওভার ব্রিজে কোনো বাচ্চা-মেয়েকে রাতে এক কোনায় পড়ে থেকে না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকতে না হয়,কোনো মা’কে এভাবে অনিদ্রায় রাত পারি দিতে না হয় ক্ষুদার জ্বালা নিয়ে।

আমি এই মানুষ গুলোর জন্য প্রতিনিয়ত কিছু করার চেষ্টা করতাম।প্রতি মাসে বেতন পেয়ে বাসায় বাজার করে দিয়ে আসতাম আমার বন্ধু তামিম’কে নিয়ে।
হোটেল থেকে কিছু খাবার নিয়ে অসহায় মানুষ খুঁজতাম কে ক্ষুধার্ত আছে?

একদিন বন্ধু ও ছোট ভাইদের’কে নিয়ে পরিকল্পনা করলাম একটি মানবসেবা সংগঠন সৃষ্টি করি!
২০২৪ নোয়াখালীর বন্যার সময়ে ভাবলাম,আসলে আমি একা যে কাজ করি সেটা যদি ১০জন মিলে করি,
তাহলে তো কাজটি আরও সহজে করা যাবে।এজন্য ‘ভলান্টিয়ার গ্রুপ’ সংগঠন করেছিলাম।
পরবর্তীতে সবাই মিলে ভলান্টিয়ার গ্রুপের নাম পরিবর্তন করে ‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ (সৃষ্টির সেবায় স্রষ্টার সন্তুষ্টি ) রাখা হয়।উদ্দেশ্য চাঁদাবাজ,মাদক ও ক্ষুধা মুক্ত দেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ।

ব্যাক্তিগত জীবনে আমি অনেক বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছি কিন্তু কখনো প্রকাশ করা হয়নি।কাউকে সাহায্য করে প্রকাশ করা ঠিক না তবে এখন আমার এই গল্প বলার উদ্দেশ্য অন্যদের আগ্রহ বাড়ানো।আমরা আমাদের এই উদ্যোগ পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ।

আমি অনেক ফ্রেন্ডলি, হাসি-খুশি,তার মানে এই না যে আমার জীবনে কোনো দুঃখের গল্প নেই,দুঃখের গল্প আছে বলেই অন্যদের মুখে হাসি ফুটানোর গল্প-লেখক হতে চেয়েছি জীবনে।